Good Friday 2025: যিশুখ্রিস্টের মৃত্যুর দিনটিকেই ‘গুড’ বলার রহস্য কী?

Good Friday 2025 পড়ছে ১৮ এপ্রিল, শুক্রবার। ‘গুড ফ্রাইডে’? মৃত্যুর দিনে ‘শুভ’ শব্দটা হলো কি ভাবে ? ২০২৫ সালের ১৮ এপ্রিল, গুড ফ্রাইডের দিনে এই প্রশ্নটা বারবার ঘুরপাক খাবে অনেকের মনে। চলুন, একটু গল্পের মতো করে জেনে নেওয়া চেষ্টা করি —এই নামের পিছনের ইতিহাস।

good friday 2025

Good Friday “গুড” নামটা এসেছে ভাষার খেলায়!

একটা ভাষাগত ভুল থেকেই জন্ম নিয়েছে এই নাম! প্রাচীন ইংরেজিতে এই দিনকে বলা হত “Gōd Friġedæg”, মানে “পবিত্র শুক্রবার”। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে “Gōd” (পবিত্র) শব্দটা মানুষের মুখে মুখে ঘুরে Good” বা “শুভ” হয়ে গেল! বাংলায় আমরা বলি “গুড ফ্রাইডে”, কিন্তু স্পেনিশরা বলেন “Viernes Santo” (পবিত্র শুক্রবার), জার্মানরা বলেন “Karfreitag” (শোকের শুক্রবার)। তাহলে আমরা কেন “গুড” বলি? আসলে, এখানে “গুড” মানে শুভ নয়—”পবিত্র”। যিশু যেদিন নিজের প্রাণ দিলেন, সেটাই যেন পবিত্র এক বিনিময়—মানুষের মুক্তির বিনিময়ে তাঁর ত্যাগ।

Good Friday মৃত্যুকে ‘শুভ’ বলার কারণ

যিশুখ্রিস্টেকে ক্রুশে বিদ্ধ করা হলো, রক্ত ঝরল, কান্নায় ভেঙে পড়লেন তাঁর অনুগামীরা। এত দুঃখের দিনে “শুভ” কথাটা এলোকোথা থেকে ? খিষ্ট্রান ধর্মালম্বীরা বিশ্বাস করেন। বাইবেলে যিশুখ্রিস্ট বলেছেন, “কেউ তার বন্ধুর জন্য প্রাণ দিলে এর চেয়ে বড় ভালোবাসা আর নেই” (যোহন ১৫:১৩)। তাঁর মৃত্যু শুধু একটি শোকের ঘটনা নয়—এটা সেই মুহূর্ত যখন মানুষ বুঝতে পেরেছিল, ঈশ্বর তাদের এতটাই ভালোবাসেন যে নিজের সন্তানকেই উৎসর্গ করলেন। তাই, এই দিনটির মধ্যে লুকিয়ে আছে আশার বীজ—মৃত্যুর পরেই তো আসে পুনরুত্থান!

খ্রিস্টান বিশ্বাস অনুযায়ী, যীশু নিজের প্রাণ দিয়ে মানবজাতির পাপের প্রায়শ্চিত্ত করেন। তাঁর এই আত্মত্যাগ মুক্তির, ক্ষমার এবং ভালবাসার প্রতীক।

“He died so we may live” — এই বাণীর মধ্যেই লুকিয়ে আছে ‘গুড’ শব্দের মানে।

✅ এই কারণেই এই দিনকে বলা হয় “Good Friday”, যদিও ঘটনাটি দুঃখজনক।

কী হয় এই দিনে?

গির্জার ঘণ্টা চুপ থাকে। আলো নিভিয়ে রাখা হয়—যেন পৃথিবীও শোক প্রকাশ করে।

অনেকেই উপোস রাখেন, প্রার্থনায় সময় কাটান।

“ক্রুশের পথ” নামে এক অনুষ্ঠানে যিশুর শেষ ১৪টি পদক্ষেপ নাটকের মাধ্যমে দেখানো হয়। কখনো কখনো দর্শকদের চোখেও জল চলে আসে।

Good Friday “গুড” শব্দের গল্প শুধু খ্রিস্টানদের নয়

এই দিনটি আমাদের শেখায় শুধু ধর্মের গণ্ডির মধ্যে আমাদের আটকে থাকলে চলবে না। যিশু বলেছিলেন, “পরকে সেই ভালোবাসো, যে ভালোবাসা তুমি নিজের জন্য চাও”। গুড ফ্রাইডে আমাদের শেখায়—আত্মত্যাগ ছাড়া মহৎ জীবন গড়া যায় না। ২০২৫ সালে আমরা যখন হিংসা, যুদ্ধ আর স্বার্থপরতায় জর্জরিত, তখন এই দিনটা যেন বলে—”পৃথিবী বাঁচাতে চাই নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, ঈর্ষা নয়।”

মজার ব্যাপার হলো, বাংলায় অনেক মুসলিম বা হিন্দু বন্ধুও এই দিনে খ্রিস্টান প্রতিবেশীদের সাথে গির্জায় যান। কেউ ফুল দেন, কেউ প্রার্থনায় সামিল হন। এটাই তো আমাদের বাংলার সৌন্দর্য—ভালোবাসার জয়গানে ধর্মের দেয়াল ভেঙে যায়।

সম্পর্কিত প্রশ্নাবলী

  • খ্রিস্টানরা যীশুর মৃত্যুর দিনটিকে গুড ফ্রাইডে বলে কেন?
  • খ্রিস্টানরা কেন যীশুর মৃত্যুর দিনটিকে গুড ফ্রাইডে জ্ঞান সংগঠক বলে?
  • Good Friday কেন পালন করা হয়?
  • গুড ফ্রাইডে শোক দিবস কেন?

Leave a Comment