দুবাই টুরিস্ট ভিসা: Dubai Tourist Visa

দুবাই ভ্রমণের আগে যা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, সেটি হলো দুবাই টুরিস্ট ভিসা সংগ্রহ করা। বাংলাদেশ থেকে কীভাবে সহজে এই ভিসা পাওয়া যায়, তা নিয়েই আজকের বিস্তারিত আলোচনা।

দুবাই—একটি এমন জায়গা যেখানে আধুনিকতা, বিলাসিতা, এবং আরব ঐতিহ্যের অপূর্ব মিশ্রণ দেখতে পাওয়া যায়। মধ্যপ্রাচ্যের এই শহর বাংলাদেশিদের কাছে একটি আকর্ষণীয় ভ্রমণ গন্তব্য হয়ে উঠেছে। বুর্জ খলিফার মাথা নত করা উচ্চতা, গোল্ড সোকের চকচকে বাজার, এবং মরুভূমির রোমাঞ্চকর সাফারি—দুবাই ভ্রমণ আপনাকে দেবে জীবনের এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।

দুবাই টুরিস্ট ভিসা

Table of Contents

দুবাই টুরিস্ট ভিসা কী?

দুবাই এর  টুরিস্ট ভিসা হলো একটি সংক্ষিপ্তমেয়াদী ভিসা যা সংযুক্ত আরব আমিরাত (UAE) ভ্রমণের জন্য ইস্যু করা হয়। এই ভিসার মাধ্যমে আপনি দুবাইসহ UAE-এর অন্যান্য শহর ঘুরে দেখতে পারবেন। এটি মূলত ভ্রমণ ও পর্যটকদের জন্য প্রযোজ্য।

বাংলাদেশ থেকে দুবাই টুরিস্ট ভিসার ধরন

বাংলাদেশি নাগরিকরা তাদের ভ্রমণের প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন মেয়াদে দুবাই টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।

  1. ১৪ দিনের ভিসা: সংক্ষিপ্ত ভ্রমণের জন্য।
  2. ৩০ দিনের ভিসা: মাঝারি মেয়াদের ভ্রমণের জন্য।
  3. ৯০ দিনের ভিসা: দীর্ঘমেয়াদী ঘোরাঘুরি বা পারিবারিক সফরের জন্য।

এছাড়াও, একবার প্রবেশের (সিঙ্গল এন্ট্রি) এবং একাধিকবার প্রবেশের (মাল্টিপল এন্ট্রি) ভিসার সুবিধা রয়েছে।

দুবাই টুরিস্ট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

দুবাই টুরিস্ট ভিসা পেতে যে কাগজপত্রগুলো প্রয়োজন:

  1. পাসপোর্ট: বৈধ এবং ৬ মাসের মেয়াদসহ।
  2. পাসপোর্ট সাইজের ছবি: সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে তোলা।
  3. ফ্লাইট টিকেট: নিশ্চিত যাওয়া ও ফেরার টিকেট।
  4. হোটেল বুকিং কনফারমেশন: অথবা আমন্ত্রণপত্র (যদি থাকে)।
  5. ব্যাংক স্টেটমেন্ট: ভ্রমণ খরচ বহন করার সক্ষমতা প্রমাণের জন্য।

বাংলাদেশ থেকে দুবাই টুরিস্ট ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া

বাংলাদেশ থেকে দুবাই টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়া সহজ হলেও সঠিক পথে আবেদন করা গুরুত্বপূর্ণ।

১. এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন:
অনেক বাংলাদেশি ট্রাভেল এজেন্সি ভিসা প্রক্রিয়া পরিচালনায় সহায়তা করে। তাদের কাছে আপনার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দিলে তারা দ্রুত ভিসা প্রসেস করে দেবে।

২. এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে:
এমিরেটস, ফ্লাই দুবাই বা এয়ার অ্যারাবিয়ার মতো এয়ারলাইন্স থেকে টিকেট কিনলে তারা ভিসা প্রসেসিং সেবা দেয়।

৩. অনলাইন আবেদন:
অনলাইনেও ভিসার জন্য আবেদন করা যায়। ভিসা আবেদনকারীর পোর্টাল বা নির্ভরযোগ্য ভিসা প্রসেসিং ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারেন।

ভিসা পেতে কত সময় লাগে?

দুবাই টুরিস্ট ভিসা সাধারণত ৩ থেকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে পাওয়া যায়। তবে এটি নির্ভর করে আবেদন প্রক্রিয়া এবং এজেন্সির ওপর।

ভিসার খরচ

বাংলাদেশ থেকে দুবাই টুরিস্ট ভিসার খরচ নির্ভর করে এর মেয়াদ ও এজেন্সির ফি-এর ওপর।

  • ১৪ দিনের ভিসা: ৬,০০০-৮,০০০ টাকা।
  • ৩০ দিনের ভিসা: ১০,০০০-১৫,০০০ টাকা।
  • ৯০ দিনের ভিসা: ৩০,০০০-৫০,০০০ টাকা।

আপনি সরাসরি আবেদন করলে খরচ কম হতে পারে।

দুবাই ভ্রমণে কেন যাবেন?

১. বুর্জ খলিফা: পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু ভবন।
২. দুবাই মল: বিলাসবহুল শপিং এবং বিনোদন।
৩. মরুভূমি সাফারি: রোমাঞ্চপ্রিয়দের জন্য সেরা অভিজ্ঞতা।
৪. পাম জুমেইরা: সমুদ্রের ওপর তৈরি আকর্ষণীয় দ্বীপ।
৫. গোল্ড সোক: স্বর্ণ কেনাকাটার জন্য বিখ্যাত।

টিপস: দুবাই ভ্রমণের আগে যা মাথায় রাখবেন

  • ভ্রমণের সময় সংযুক্ত আরব আমিরাতের আইন-কানুন সম্পর্কে সচেতন থাকুন।
  • পোশাক নির্বাচনে শালীনতা বজায় রাখুন।
  • আবহাওয়া উষ্ণ হওয়ায় হালকা ও আরামদায়ক পোশাক নিন।
  • ব্যাগে পর্যাপ্ত পানি রাখুন।

দুবাই ঘুরতে যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ করা এখন আর কঠিন নয়। সঠিকভাবে দুবাই টুরিস্ট ভিসা আবেদন করে সহজেই আপনি এই গন্তব্যে যেতে পারেন। সময়মতো পরিকল্পনা করুন, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংগ্রহ করুন, এবং আপনার ভ্রমণের দিনগুলো উপভোগ করার প্রস্তুতি নিন।

দুবাই টুরিস্ট ভিসা: প্রশ্নোত্তর (FAQ)

 

প্রশ্ন ১: দুবাই ভিজিট ভিসা খরচ ২০২৪ কত?

উত্তর: ২০২৪ সালে দুবাই ভিজিট ভিসার খরচ মেয়াদ অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়:

  • ১৪ দিনের ভিসা: ৬,০০০-৮,০০০ টাকা
  • ৩০ দিনের ভিসা: ১০,০০০-১৫,০০০ টাকা
  • ৯০ দিনের ভিসা: ৩০,০০০-৫০,০০০ টাকা

প্রশ্ন ২: দুবাই টুরিস্ট ভিসা ২০২৪ এর প্রক্রিয়া কীভাবে হয়?

উত্তর: ২০২৪ সালে দুবাই টুরিস্ট ভিসার জন্য প্রক্রিয়াটি নিম্নরূপ:

  1. পাসপোর্ট, ছবি এবং ফ্লাইট টিকিট প্রস্তুত করুন।
  2. অনলাইন বা এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করুন।
  3. ভিসা ফি প্রদান করে প্রসেসিং সম্পন্ন করুন।

প্রশ্ন ৩: দুবাই ভিজিট ভিসা বের হতে কতদিন লাগে?

উত্তর: দুবাই ভিজিট ভিসা সাধারণত ৩-৭ কার্যদিবসের মধ্যে ইস্যু করা হয়। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে (যেমন ছুটির দিন বা অতিরিক্ত ভিসা আবেদন) সময় কিছুটা বাড়তে পারে।

প্রশ্ন ৪: দুবাই টুরিস্ট ভিসা কবে চালু হবে?

উত্তর: দুবাই  ভিসা বর্তমানে চালু রয়েছে এবং ২০২৪ সালের জন্য আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে।

প্রশ্ন ৫: দুবাই টুরিস্ট ভিসা চেক কীভাবে করবেন?

উত্তর: আপনার ভিসার স্ট্যাটাস চেক করতে UAE-এর সরকারি ওয়েবসাইট বা সংশ্লিষ্ট এজেন্সির পোর্টাল ব্যবহার করতে পারেন। আপনার আবেদন নম্বর এবং পাসপোর্ট তথ্য দিয়ে এটি যাচাই করা যায়।

প্রশ্ন ৬: দুবাই টুরিস্ট ভিসা কি বন্ধ?

উত্তর: না, বর্তমানে দুবাই ভিসা বন্ধ নেই। এটি ২০২৪ সালেও সচল রয়েছে। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে এটি সাময়িকভাবে বন্ধ হতে পারে।

প্রশ্ন ৭: দুবাই ভিসার ছবি কেমন হওয়া উচিত?

উত্তর: ভিসার জন্য পাসপোর্ট সাইজের ছবি প্রয়োজন, যেখানে:

  • সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড থাকবে।
  • চেহারা পরিষ্কারভাবে দৃশ্যমান হতে হবে।
  • ছবি ৩.৫ x ৪.৫ সেমি মাপের হওয়া উচিত।

প্রশ্ন ৮: দুবাই টুরিস্ট ভিসা করতে কী কী লাগে?

উত্তর: দুবাই  ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:

  1. বৈধ পাসপোর্ট (৬ মাসের মেয়াদসহ)।
  2. পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  3. নিশ্চিত ফ্লাইট টিকিট।
  4. হোটেল বুকিং বা স্পন্সরশিপ ডকুমেন্ট।
  5. ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা আর্থিক প্রমাণ।

প্রশ্ন ৯: দুবাই টুরিস্ট ভিসার দাম কত?

উত্তর: দুবাই  ভিসার দাম নির্ভর করে মেয়াদ এবং ভিসার ধরন অনুযায়ী:

  • ১৪ দিনের ভিসা: ৬,০০০-৮,০০০ টাকা
  • ৩০ দিনের ভিসা: ১০,০০০-১৫,০০০ টাকা
  • ৯০ দিনের ভিসা: ৩০,০০০-৫০,০০০ টাকা

প্রশ্ন ১০: দুবাই ভিসা কি বাংলাদেশের জন্য উন্মুক্ত?

উত্তর: হ্যাঁ, বাংলাদেশের নাগরিকরা দুবাই টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। ২০২৪ সালেও এটি উন্মুক্ত রয়েছে।

প্রশ্ন ১১. দুবাই ভিজিট ভিসা করতে কত টাকা লাগে?

দুবাই ভিজিট ভিসার খরচ ভিসার ধরন, মেয়াদ, এবং প্রসেসিং ফি-এর উপর নির্ভর করে। সাধারণত ৩০ দিনের ভিসার খরচ ৭,০০০-১২,০০০ টাকা (বাংলাদেশি) এবং ৯০ দিনের ভিসার খরচ ২০,০০০-৩৫,০০০ টাকা হতে পারে।

প্রশ্ন ১২. দুবাই সাধারণ ক্ষমা কত দিন?

দুবাই সাধারণ ক্ষমা (আমনেস্টি) সাধারণত নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ঘোষণা করা হয়, এবং এটি ভিসার নিয়ম লঙ্ঘনকারীদের জন্য প্রযোজ্য। সময়সীমা প্রতিবারের জন্য ভিন্ন হতে পারে।

প্রশ্ন ১৩. ভারতীয়দের জন্য দুবাইতে অন অ্যারাইভাল ভিসা পাওয়া যায়?

হ্যাঁ, ভারতীয়দের জন্য দুবাইতে অন অ্যারাইভাল ভিসা পাওয়ার সুযোগ আছে, তবে তাদের বৈধ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অথবা শেনজেন ভিসা থাকতে হবে।

প্রশ্ন ১৪. দুবাই টুরিস্ট ভিসা কবে চালু হবে?

দুবাই টুরিস্ট ভিসা সাধারণত সারা বছরই চালু থাকে। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে (যেমন মহামারী বা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত) এটি সাময়িকভাবে বন্ধ হতে পারে।

প্রশ্ন ১৫. দুবাই ট্যুরিস্ট ভিসার মেয়াদ কতদিন?

দুবাই ট্যুরিস্ট ভিসার মেয়াদ সাধারণত ৩০ দিন বা ৯০ দিন হতে পারে। এটি একক বা একাধিক প্রবেশাধিকারযুক্ত হতে পারে।

প্রশ্ন ১৬. ভিজিট ভিসা মানে কি?

ভিজিট ভিসা এমন একটি ভিসা যা একজন ব্যক্তি ভ্রমণ, পরিবার পরিদর্শন, বা কাজের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে পারেন। এটি মূলত অস্থায়ী থাকার জন্য প্রদান করা হয়।

প্রশ্ন ১৭. টুরিস্ট ভিসার দাম কত?

টুরিস্ট ভিসার দাম নির্ভর করে ভিসার ধরন, মেয়াদ এবং সার্ভিস প্রদানকারী এজেন্সির উপর। সাধারণত ৩০ দিনের ভিসার খরচ ৭,০০০-১৫,০০০ টাকা এবং ৯০ দিনের ভিসার খরচ ২০,০০০-৩৫,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

প্রশ্ন ১৮. ভিজিটর ভিসা আর ট্যুরিস্ট ভিসা কি এক?

ভিজিটর ভিসা এবং ট্যুরিস্ট ভিসা মূলত একই, তবে উদ্দেশ্যের ক্ষেত্রে পার্থক্য থাকতে পারে। ট্যুরিস্ট ভিসা মূলত ভ্রমণের জন্য ব্যবহৃত হয়, আর ভিজিট ভিসা পরিবার পরিদর্শন বা অন্যান্য ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়।

প্রশ্ন ১৯. ভিসা প্রসেসিং করতে কত দিন লাগে?

দুবাই ভিসা প্রসেসিং সাধারণত ২-৭ কার্যদিবস সময় নেয়। তবে জরুরি ভিসার ক্ষেত্রে এটি ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সম্পন্ন হতে পারে।

কোনো নির্দিষ্ট প্রশ্ন থাকলে আপনার ট্র্যাভেল এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করুন বা দুবাই ইমিগ্রেশন অফিসে খোঁজ নিন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top